Table of Contents
ইট কি বা কাকে বলে
কাদাজাত সামগ্রীর মধ্যে ইমারত নির্মাণে ইটের ব্যবহার সর্বাধিক পরিলক্ষিত হয়। ইট কাদার তৈরি আয়তকার কঠিন ঘনবস্তু। এগুলো কাঁচা অবস্থায় নমনীয় এবং উচ্চ তাপে পোড়ানোর পর কৃত্রিম পাথরের ন্যায় শক্ত হয়।
ইটের মাপ কত ইঞ্চি ও এর ওজন
পাবলিক ওয়ার্কস ডিপার্টমেন্টের (P.W.D)মতানুসারে ইটের সঠিক মাপ 9.5˝মিমি× 4.5˝মিমি× 2.75˝মিমি এবং ওজন 3.125 কেজি।
ইটের কাঁচামাল এবং ভালো ইট তৈরির মৃত্তিকার বৈশিষ্ট্য
মাটি বা কাদাই ইটের প্রধান কাঁচামাল। আগ্নেয় শিলার প্রাকৃতিকভাবে ক্ষয়িত বা বিশিষ্টায়িত ০.০০৫ মিলিমিটার এর চেয়ে সূক্ষ্ম কণাই ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
১.ইট তৈরির মাটি বিশুদ্ধ কর্দম ও বালির পরিমিত মিশ্রণ হবে।
২.এগুলোতে পরিমিত পরিমাণে অ্যালুমিনা, লাইম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়া থাকা আবশ্যক।
৩.এগুলোতে খন্ডকারে মাটি বা অপদ্রব্য থাকবে না।
৪.এগুলোতে ইটের জন্য অনিষ্টকর উপাদান থাকবে না।
৫.উত্তম ইট তৈরির মাটিতে পানি দিয়ে আর্দ করে সমসত্ত্ব ও সাম্য মিশ্রণের কাদা তৈরি করা যাবে।
৬.এগুলোতে তৈরি কাদা সহজে মোলড করা যাবে।
৭.এগুলো শুকানোর পর দহন সীমার পোড়ালে পাথরের ন্যায় শক্ত হবে, নমনীয় হবে না আকার-আকৃতিতে কোনরূপ বিকৃতি ঘটবে না।
ইটের কাদায় রাসায়নিক উপাদান সমূহ
১.সিলিকা: এতে ইটে ফাটল, বক্রতা ও সংকোচন সৃষ্টি হয় না।
২.অ্যালুমিনা: এটা ইটের ঘনত্ব বাড়ায় কিন্তু প্রয়োজনের অধিক অ্যালুমিনা ইট শুকানোর সময় সংকোচন, ফাটল ও বক্রতা সৃষ্টি করে এবং পোড়ানোর প্রভাবে অধিক দৃঢ়তা বাভ করে।
৩.আয়রন অক্সাইড: ইটের কাদায় আয়রন অক্সাইডের পরিমাণ ও পোড়ানোর তাপমাত্রার উপর ইটের বর্ণ নির্ভর করে।
৪.ম্যাগনেশিয়া: ইটের কাদায় প্রয়োজনানু পাতে ম্যাগনেশিয়া থাকলে হলুদাভ বর্ণ সৃষ্টি করে এবং ইটের সংকোচন প্রতিহত করে।
৫.লাইম: লাইম ইট শুকানোর সময় সংকোচন প্রতিহত করে এবং পোড়ানোর সময় বিগলক হিসেবে কাজ করে ইটের উপাদানসমূহকে গলাতে এবং কণাসমূহকে দৃঢ়াবদ্ধ হতে সহায়তা করে।
৬.জৈব পদার্থ: ইটের কাদায় সামান্য পরিমাণ জৈব পদার্থ পোড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করে কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত জৈব পদার্থ সম্পূর্ণরূপে দাহ্য হয়ে ইটের ওজন কম হয়।
ইটের কাদায় নানা ধরনের ক্ষতিকর বা অনিষ্টকর উপাদান হলো
ইটের কাদায় যাবতীয় অনিষ্টকর পদার্থমুক্ত হওয়া আবশ্যক। ইটের কাদায় অনিষ্টকর উপাদান থাকলে ইট নিকৃষ্টমানের হবে এবং নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা যাবে না, কাজেই তৈরির পূর্বে ইটের কাদা ভালোভাবে পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
ইটের কাদায় অনিষ্টকর উপাদান গুলো: ক্ষার, পাথর খন্ড, চুনাপাথর বা লাইম স্টোন, আয়রন পাইরাটিস, উদ্ভিদজাতীয় ও অন্যান্য জৈব পদার্খ, লবণ ইত্যাদি।
ইট শুকানো হয় কেন বা ইট শুকানোর কারণ
কাঁচা ইট নমনীয় থাকে। ইটের নির্দিষ্ট আকার-আকৃতি অক্ষুণ্ন রেখে স্থানান্তর ও পোড়ানোর জন্য চুল্লিতে সাজানো এবং অপেক্ষাকৃত কম জ্বালানিতে পোড়ানোর সুবিধার জন্য ইট শুকানো হয়।
ইট তৈরির উপাদান বা ধাপগুলো
১.ইটে ব্যবহৃত কাদার রাসায়নিক ধর্ম।
২.কাদা প্রস্তুতকরণ।
৩.ইট শুকানোট পদ্ধতি।
৪.ইট পোড়ানোর সময় তাপমাত্রা।
৫.ইট পোড়ানোর কালে চুল্লিতে বায়ুপ্রবাহের পরিমাপের উপর ইটের উক্ত বিষয় গুলো প্রভাব বিস্তার করে।
ইট দুই পদ্ধতিতে শুকানো হয়
১. প্রাকৃতিক পদ্ধতি
২.কৃত্রিম পদ্ধতি
১.ইট শুকানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি:
মাঠে ইট তৈরির পর মাঠেই এগুলোকে ২ হতে ৩ দিন রাখার ফলে এগুলো রোদের তাপে শুকিয়ে বেশ শক্ত হয়। তারপর মাঠেই ইটখোলায় কিনারা ঘেঁষে প্রতি ইটের মাঝে ২ সেমি হতে ৪ সেমি ফাঁক রেখে কাত করে সাজিয়ে ৫ হতে ৭ দিন রাখা হয়। সূর্যের তাপের প্রখরতার উপর ইট শুকানোর সময়ের পরিমাণ নির্ভর করে। ভালোভাবে শুকানোর পর ইট পোড়ানোর জন্য চুল্লিতে দেয়া হয়।
২.ইট শুকানোর কৃত্রিম পদ্ধতি:
আবহাওয়ার প্রতিকূলতা দেখা দিলে বা তাড়াতাড়ি ইটের চাহিদা পূরণের দরকার হলে ইট শুকানোর প্রকোষ্ঠ
বা টানেলে তপ্ত বাতাস বা গ্যাস প্রবাহিত করে ইট কৃত্রিম উপায়ে শুকানো হয়। এ সময় সতর্কতার সাথে তপ্ত বাতাস বা গ্যাস প্রবাহিত করতে হয় যেন ইট অতি দ্রুত শুকানোর ফলে এতে ফাটল সৃষ্টি না হয়। কৃত্রিম উপায়ে ইট শুকানো কালে তাপমাত্রা সাধারণত ১২০ ডিগ্রী সে. এর মধ্যে হয় এবং ইট ২ হতে ৩ দিনের মধ্যে শুকিয়ে যায়।
উত্তম ও প্রথম শ্রেণির ইটের বৈশিষ্ট্য
১.উৎকৃষ্ট ইট বা প্রথম শ্রেণির ইট আকারে সুষম। এর তলগুলো সমান, কিনার ও কোণগুলো তীক্ষ্ণ এবং পার্শ্ব গুলো সমান্তরাল।
২.সাম্য বর্ণ এ ধরণের ইটের অন্যতম বৈশিষ্ট্য কারণ বর্ণের সাম্যতা ইটের পোড়ানো ও রাসায়নিক গঠনের সমরূপতার পরিমাপক। উৎকৃষ্ট ইট সাধারণত গাঢ় লাল বা তাম্র বর্ণের হয়ে থাকে।
৩.উৎকৃষ্ট ইটের কাঠিন্য এমন যে, এতে নখ বা ছুরি দিয়ে আঁচড় কাটা যায় না, এবং হাতুড়ি দ্বারা আঘাত করলে ঝন ঝন শব্দ হবে।
৪.ইংরেজি টি (T) অক্ষরের ন্যায় স্থাপন করে ১.৫ হতে ১.৭ মিটার উঁচু হতে স্বাভাবিক শক্ত মাটির উপর স্বাভাবিক অবস্থায় ছেড়ে দিলে এ ধরণের ইট ভাঙ্গে না।
৫.এ ধরণের ইট সুবদ্ধ এবং মিহি ও সমবুনটযুক্ত। এ ইট ভাঙলে বগ্নতলে কোনরূপ চিড়, চুনের কণা বা বুদবুদ দৃষ্ট হয় না।
৬.ইট প্রধানত চাপ পীড়ন সহ্য করতে পারে এবং উৎকৃষ্ট ইটের বিচূর্ণন শক্তি ৪০০-৭০০ টন/বর্গমিটার।
৭.এ ধরণের ইটের প্রতিটির ওজন প্রায় ৩.১২৫ কেজি (প্রচলিত বাংলাদেশি মানম্মত ইট) এবং প্রতি ঘনমিটার এর ওজন ১৮৯২ কেজি এর কম নয়।
৮.উৎকৃষ্ট ইটের পানি বিশোষণ এর শুষ্ক অবস্থায় ওজনের ১/৫ অংশ হতে ১/৭ অংশ (১৫% হতে ২০%) এর অধিক নয়।
৯.উৎকৃষ্ট ইটে দ্রাব্য লবণের (পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম এর সালফেট) কারণ অধিক পরিমাণ দ্রাব্য লবণ গাঁথুনি পৃষ্ঠে উদত্যাগের সৃষ্টি করে, যা গাঁথুনিকে স্থায়ীভাবে আর্দ ও সেঁতসেঁতে করে।
১০.ইটের তৈরি ইমারত গ্রীষ্মে শীতল এবং শীতে উষ্ণ হওয়া প্রয়োজন বিধায় উৎকৃষ্ট ইটের তাপ পরিবাহিতা ন্যূনতম।
১১.উৎকৃষ্ট ইট দাহ্য নয় ও দহনে সহায়তা করে না। অধিক সিলিকাযুক্ত ইট তুলনামূলকভাবে অগ্নিরোধী।
উৎকৃ্ষ্ট ইটের তৈরি ইমারত সন্তোষজনকভাবে অগ্নিরোধী।
১২.উৎকৃষ্ট ইট পানিতে ভিজলে আয়তনে পরিবর্তন হয় না।
১৩.এগুলোর বাংলাদেশি মানসম্পত পরিমাপ 240 মিমি × 112 মিমি × 70 মিমি ( 9 1⁄2×4 1⁄2×2 3⁄4 )
অপেক্ষা 3.175 মিমি (1/8) কম বা বেশি হতে পারে।
ইট দুভাবে তৈরি করা হয়, যথা-
১.হাতে তৈরি
২.যন্ত্রে তৈরি
১.১হাতে তৈরি পদ্ধিতি আবার দুই প্রকার:–
(ক)মাঠে বা ভূমিতে তৈরি
(খ)টেবিলে তৈরি
২.২যন্ত্রে তৈরি আবার দুই প্রকার
(ক)নমনীয় পদ্ধতি
(খ)শুষ্ক পদ্ধতি
ইটকে চার শ্রেণিতে ভাগ করা হয় এবং এদের ব্যবহার
১.প্রথম শ্রেণির ইট
২.দ্বিতীয় শ্রেণির ইট
৩.তৃতীয় শ্রেণির ইট
৪.পিকড ঝামা ইট
১.প্রথম শ্রেণির ইট: উত্তমরূপে পোড়ানো সাম্যগাঢ় লাল বা তাম্র বর্ণের এবং সুষম আকারবিশিষ্ট ইটই প্রথম শ্রেণির ইট। এগুলোকে আঘাত করলে ধাতব বাজনার শব্দ হবে। ২৪ ঘন্টা পানিতে ডুবিয়ে রাখলে এগুলো স্বীয় শুষ্ক ওজনের ছয় এর এক ভাগ এর বেশি পানি শোষণ করে না। এদের কোণগুলো তীক্ষ্ণ এবং ধারগুলো ধারালো।
ব্যবহার:- স্থায়ী নির্মাণকাজে এ শ্রেণির ইট ব্যবহার করা হয়, যেমন- ইমারত, ব্রিজ, কালভার্ট দেশের প্রধান সব নির্মাণ কাজে এই ব্যবহৃত হয়। নির্মাণের পৃষ্ঠে পয়েন্টিং করতে হলে এ জাতীয় ইট ব্যবহৃত হয়।
২.দ্বিতীয় শ্রেণির ইট: এ জাতীয় ইট প্রথম শ্রেণির ইটের মতোই, তবে ধার ও কিনারাগুলোতে সামান্য অসাম্যতা দেখা যায় এবং পানি শোষণ করে প্রায় ২২%।
ব্যবহার:- এ শ্রেণির ইট আধাস্থায়ী বা ক্ষণস্থায়ী কাজে ব্যবহার করা হয়। এ শ্রেণির ইট নির্মাণে ব্যবহারের পর আস্তর করে দিতে হয়।
৩.তৃতীয় শ্রেণির ইট: এ শ্রেণির ইট পর্যাপ্ত পোড়া না হওয়ায় আংশিক শক্ত হয়। এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য এরা হলুদ বর্ণের। এরা বাতাস হতে দ্রুত জলীয়বাষ্প গ্রহণ করে লবণাক্রান্ত হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলোর আকার-আকৃতি বিকৃতি ঠিক থাকে না।
ব্যবহার:- এ জাতীয় ইট গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবহার হয় না।
৪.পিকড ঝামা ইট: অত্যাধিক পোড়া হওয়ার ফলে ঝামা ইটের উদ্ভব হয়। এ শ্রেণির ইট কাচজাত দ্রব্যের গুণাবলি প্রাপ্ত হয় এবং আকৃতিতে বিকৃতি দেখা দেয়। এগুলোকে পিকড ঝামা ইট নামে আখ্যায়িত করা হয়।
ব্যবহার:– এগুলো রাস্তার খোয়ার কাজে এবং কংক্রিটের কোর্স অ্যাগ্রিগেইট হিসেবে ব্যবহার করা যায়। কিছু কিছু ইট মাত্রাতিরিক্ত তাপে পিন্ডে পরিণত হয়, এগুলো ঝামা ইট নামে পরিচিত। এগুলোকে কঠিন ও ভঙ্গুর।
তাই প্রকৌশলী কার্যে এগুলো ব্যবহার করা হয় না।
ইটের সাধারণ পরীক্ষা
ইট সাধারণত দুই ভাবে পরীক্ষা করা হয়,
(ক)ইটের মাঠ পরীক্ষা
(খ)গবেষণাগারে ইট পরীক্ষা
(ক)ইটের মাঠ পরীক্ষা:-
১.একটি ইট নিয়ে এর পৃষ্ঠে নখের সাহায্যে আঁচড় কাটাতে চেষ্টা করতে হবে। যদি আঁচড় কাটা যায় তবে ইটটি ভাল নয়। যদি আঁচড় না কাটা যায় তবে এটা দৃঢ়াবদ্ধ গঠনের ভাল ইট।
২.একটি ইটকে অন্য একটি ইট বা হাতুরি দিয়ে আঘাত করতে হবে। যদি পরিস্কার বাজনা বা ধাতব আঘাতের শব্দ হয় তবে এটি ভাল ইট।
৩.দুটি ইট নিয়ে এদেরকে T এর মতো স্থাপন কারে ১.৫ মিটার থেকে ১.৭ মিটার উপর হতে স্বাভাবিক মাটির উপর স্বাভাবিক অবস্থায় ছেড়ে দিলে যদি ভেঙে যায় তবে এটি ভাল ইট নয়, যদি না ভেঙ্গে তবে ভাল ইট।
৪.একটি ইট ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করতে হবে। যদি এগুলোতে ছিদ্রের পরিমাণ অধিক পরিলক্ষিত হয়, তবে ইট ভাল নয়।
৫.ইটের টুকরাগুলো ভাল করে দেখতে হবে। যদি এগুলোকে বর্ণের ভিন্নতা দেখা যায় তবে ইট ভাল নয়, কিন্তু যদি সদৃশ গাঢ় লাল বা তাম্র বর্ণের হয় তবে ভাল ইট।
(খ)গবেষণাগারে ইট পরীক্ষা:-
ইট নির্মিত কাঠামোতে আগত ভার বা বলের ফলে যে পীড়ন সৃষ্টি হয়, ইট উক্ত পীড়ন প্রতিরোধ করে কাঠামো টিকিয়ে রাখে বিধায় ইটে নির্দিষ্ট পরিমাণ পীড়ন প্রতিরোধের ক্ষমতা থাকতে হয়। তা ছাড়া বৃষ্টি, তুষার ক্রিয়া, আগুন ইত্যাদি কতে কাঠামোর রক্ষার জন্য ইটের আবহাওয়ায় টিকে থাকার গুণ থাকা আবশ্যক। এতদভিন্ন গ্রীষ্মকালে শীতল ও শীতকালে ইমারতে গরম রাখা, কাঠামোর লবণাক্রান্ত হতে রক্ষা করা এবং শব্দ অন্তরক বা সাউন্ড ইনসুলেটর হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার জন্য ইটের প্রয়োজনীয় বৈশৈষ্ট্যাদি থাকা দরকার।
গবেষণাগারে চার ভাবে ইট পরীক্ষা করা হয়:-
১.শক্তি পরীক্ষা
২.পানি শোষ্যতার মাত্রা পরীক্ষা
৩.এফ্লোরেসেন্স পরীক্ষা বা লবণের মাত্রা নির্ধারণের পরীক্ষা
৪.আবহাওয়ার প্রতিকূলতার টিকে থাকার ক্ষমতা পরীক্ষা
কোনো বই পাওয়া যাবে।